মৌলভীবাজার জেলার কিছু পুরাকীর্তি
মৌলভীবাজার জেলা বাংলাদেশের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এ জেলার সাতটি উপজেলার প্রায় শতাধিক পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে।ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের পুরাকীর্তির কোনটি আংশিক আবার কোনটি পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। ঐতিহাসিক গুরুত্ববাহী এসব নিদর্শন যথাযথ সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণকরা প্রয়োজন।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত পর্যটকরা ওই সব পুরাকীর্তিগুলো দেখতে আছে। এ অঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রকে শিল্পে রূপান্তর করার বিপুল সম্ভাবনা আছে।
এ জেলার যেসব পুরাকীর্তি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থান দখল করে আছে সেগুলো হচ্ছে—
১) জেলা সদরের গয়ঘরে খোজার মসজিদ ও তৎসংলগ্ন দীঘি, গড়, দুর্গ ও বিবির মাজার, জগৎশ্রী শ্রী দোল গোবিন্দ আশ্রম, পশ্চিমবাজার, শ্রী শ্রী গোবিন্দ জিউড় আখড়া, দরগা মহল্লায় ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রঃ)-এর মাজার ও তৎসংলগ্ন প্রাচীন মসজিদ, পুকুরসহ আরো ৪-৫টি মাজার, পশ্চিমবাজার মনু নদীর জাহাজ ঘাট, মনুমুখ পাট বন্দর, কামরূপ রাজ ভগদত্তের উপরাজধানী দিনারপুর ভগ্নাবশেষ (কাগাবালা), শহরের আদালত এলাকার টাউনহল (সাবেক জিন্নাহ হল), পিটিআইয়ের ভূর্গভস্থ ব্যাংকারে '৭১-এ পাকবাহিনী ও স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর ব্যবহৃত টর্চার সেল ও বধ্যভূমি, শাহবন্দর, উলু আইলের পালতোলা জাহাজের ভাসমান মাস্তুল, হিলাল পুরে ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত শাহ হিলাল (রাঃ)-এর মাজার, গায়েব নগর হযরত শাহ গায়েব (রঃ)-এর মাজার, কামালপুর হযরত শাহ কামাল (রঃ)-এর মাজার, ঘোড়াখাল হযরত হাজী আহামদ ওরফে হাজী রসুল (রঃ)-এর মাজার, সৈয়ারপুর প্রাচীন মন্দির।
২) রাজনগর উপজেলায় উত্তরভাগে দুইশতাধিক বছরের পুরনো শ্রী চক্রবর্তীর বাড়ির মন্দির ও বিগ্রহ, একশ' বছরের প্রাচীন উত্তরভাগ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, এ অঞ্চলেই বিখ্যাত সিংহবাড়ির শতাধিক বছরের প্রাচীন শিবমন্দির ও ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত বড় মালিক (রঃ)-এর মাজার, কদমহাটা প্রাচীন জামে মসজিদ ও ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত সৈয়দ শাহ রুকন উদ্দিন (রঃ)-এর মাজার, লামুয়া প্রখ্যাত সূফী সাধক হযরত ইছাক (রঃ)-এর মাজার, কদমহাটা বিখ্যাত কালীবাড়ী, টেংরাবাজার হযরত সর্দার শাহ (রঃ)-এর মাজার, তারাপাশা শতাব্দী প্রাচীন বিষ্ণুপদ ধাম, মনসুর নগর দেওয়ান বাড়ির বাংলাঘর ও তৎসংলগ্ন প্রাচীনদীঘি, পাঁচগাঁও বাংলা সংবাদ পত্রের- আদি পুরুষ গৌরি শংকর ভট্টাচার্য, ঐতিহাসিক কালো ঝম ঝমও জাহান কোষা কামানের নির্মাতা জনার্দন কর্মকারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের প্রথমছাত্রী বিপ্লবী নারী লীলা নাগের বাড়ী, একই এলাকায় শান্তিময় দাসের বাড়ীতে প্রাচীন শ্রী শ্রী দুর্গা পূজা মন্ডপ, অত্র-অঞ্চলের তৎকালীন বিখ্যাত রাজা সুবিদ নারায়ণের রাজবাড়ি, বিখ্যাত কমলা রানীর দীঘি ও তৎসংলগ্ন রাজা সুবিদ নারায়ণসহ রাজ পরিবারবর্গের সমাধিস্থল, হযরত শাহ কুতুবউদ্দিন (র:) এর মাজার, ৭১ ও ৬৯ শহীদের গণকবর, জামাল খাঁ দীঘি, কামাল খাঁ দীঘি, কামার চাক দেওয়ান বাড়ির বাংলাঘর ও তৎসংলগ্ন প্রাচীন জামে মসজিদ, ঐতিহ্যবাহী আব্দুল্লাহপুরে হযরত হেলিম উদ্দিন কোরেশী (রঃ)-এর মাজার, রাজ নগর সদরে পোর্টিয়াস উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে কোদালী দীঘি।
৩) কুলাউড়া উপজেলায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তীর্থস্থান- রঙ্গিরকুল আশ্রম (বর্তমানে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃতসংঘ ইসকনের মন্দির), প্রাচীন তাম্রফলক প্রাপ্তিস্থান ভাটেরা টিলা, আসামের ইস্টার্ন গেট নামে খ্যাত কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন, নন্দ নগরের বিখ্যাত সতীদাহ মন্দির, নন্দ নগরের সতীদাহ মন্দির, ইরানের শাহান শাহ রেজা শাহ পাহলভীর আগমন উপলক্ষে লংলা রেলস্টেশনে নির্মিত সুরম্য তোরণ, পৃথিম পাশা নবাব বাড়িও তৎসংলগ্ন হযরত শাহ ডিঙ্গী (রঃ)-এর মাজার, কাউকাপন হযরত হামিদ ফারুকী (রঃ) এর মাজার, শরীফপুর হযরত হাজী পীর (রঃ)-এর মাজার, হাজীপুর হযরত হেলীম উদ্দিন নূর নালী (রঃ)-এর মাজার। জুড়ী উপজেলায় বেকাতুরা হযরত গরীব খাকী (রঃ)-এর মাজার,
৪) বৃটিশ আমলের জুড়ী রেলস্টেশন, দক্ষিণভাগ হযরত ইরানী (রঃ) পীর সাহেবের মাজার।
৫) ঐতিহ্যবাহী বড়লেখা উপজেলায় শাহবাজপুর মোঘল শাসনামলে নির্মিত বিখ্যাত সালেগড় দুর্গ, মাধবকুন্ড ও তৎসংলগ্ন প্রাচীন আমলের শিব মন্দির, পাথারিয়া হযরত সৈয়দ ইয়াকুব (রঃ)-এর মাজার, চান্দরপুর- হযরত দরিয়া পীর (রঃ)-এর মাজার।
৬) শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৪শ' বছরের সুপ্রাচীন শ্রী শ্রী নিমাই শিব বাড়ি, কালাপুরের শতাব্দী প্রাচীন রাধাগোবিন্দের মন্দির, একই এলাকায় তাম্রফলক প্রাপ্তিস্থান, লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কের প্রাচীন দুর্লভ ক্লোরোফর্ম বৃক্ষ।
৭) কমলগঞ্জ এগণহত্যার বধ্যভূমি, , বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের সমাধি,পতন উষার দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, ইরানের শাহান শাহ রেজাশাহপাহলভীর আগমন উপলক্ষে শমশের নগরে নির্মিত রেলস্টেশনের নির্মিত সুরম্য তোরণও ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত বিমান বন্দর, একই এলাকায় ভাইদার দেউল হযরত শাহকালা (রঃ) ও হযরত গাজী মালিক (রঃ) এর মাজারসহ মোঘল, নবাবী, ব্রিটিশপাকিস্তান শাসনামলে নির্মিত বিভিন্ন পুরাকীর্তি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস