সাহিত্যিক
সৈয়দ মুজতবা আলী
পিতা: খাঁন বাহাদুর সৈয়দ সিকন্দর আলী৷
জন্ম: ১৯০৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর৷
কর্ম: বাংলা কথা সাহিত্যের প্রাণ পুরুষ৷ সিলেট বিভাগের প্রথম মুসলমান হিসাবে ১৯৪৯ সালে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নরসিংহ দাস পুরষ্কার ও ১৯৬১ সালে সুরেশ চন্দ্র স্মৃতি পুরষ্কার লাভ করেন৷ ২৯টি গ্রন্থের প্রণেতা৷ উল্লখযোগ্য হল দেশে বিদেশে (১৩৫৪), পঞ্চতন্ত্র (১৩৫৯), চাচা কোহিনী (১৩৫৯), ময়ুরকন্ঠী(১৩৫৯) ইত্যাদি৷ তিনি বহুভাষাবিদপন্ডিত ছিলেন৷
মৃত্যু: ১৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রয়ারী ঢাকায় ইন্তেকাল করেন৷ আজিমপুর গোরস্থানে ভাষা শহীদ বরকত ও শফিকের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়৷
সৈয়দ শাহনূর
পিতা: সৈয়দ নূর
জন্ম: ১৭৩০ সালে রাজনগর উপজেলার ঘড়গাঁও গ্রামে৷
কর্ম: মধ্যযুগের শ্রেষ্ট কবি। ১৮১৯ সালে “নূর নছিহত” নামক সুবৃহৎ পুথি রচনা করেন। পুথির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩০২, গানের সংখ্যা ১০৮, ধাঁধাঁর সংখ্যা ৪১।
অন্যান্য গ্রন্থ : রাগনূর, সাত কন্যার খান৷
মৃত্যু: ১৮৫৫৷ তাঁর মাজার নবীগঞ্জ উপজেলার জালালসাপ গ্রামে অবস্থিত৷
কাজী মুহম্মদ আহমদ
জন্মঃ ১৮৩০ সালে মৌলভীবাজার জেলার ধউপাশা গ্রামে৷
কর্মঃ সিলেট বিভাগের প্রথম ইতিহাস লেখক৷ ১৮৮১ সালে জেলার কাজী নিযুক্ত হন৷ আঞ্জুমানে ইসলামিয়া স্থাপন করে এর সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেন৷ ১৮৮৫ সালে বাংলা ভাষায় সিলেটের গ্রন্থ শ্রীহট্ট দর্পন রচনা করেন৷
আশরাফ হোসেন-সাহিত্য রত্ন
পিতা: মুন্সী জওয়াদ উল্লাহ৷
জন্ম: ১৮৯৯ সালে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর গ্রাম৷
কর্ম: সিলেট বিভাগের লোক সাহিত্যের পথিকৃত৷ তাঁর রচিত গ্রন্থ সিলহটের ইতিহাস, মনিপুরের লড়াই, শাহজালালের কিচ্ছা ইত্যাদি৷ তাঁর সংগৃহীত মরমী গানের মধ্যে রয়েছে শাহ হাজির আলির হাজিরতরান এবং সাধক কবি রাধারমনের রাধারমন সংগীত৷
মৃত্যুঃ ১৯৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারী৷
দ্বিজেন্দ্র শর্মা
জন্ম: ১৯২৯ সালের ৩০ মে বড়লেখা উপজেলার শিমলিয়া গ্রামে৷
কর্ম: ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমী পুরষ্কার পান৷ আধুনিক গদ্যে দক্ষ ছিলেন৷ ব্রজমোহন ও নরটডেম কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন৷ বহুগ্রন্থপ্রণেতা৷
মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী
জন্ম: ১৮৭৮ সালে মৌলভীবাজার সিংকাপন গ্রামে৷
কর্ম: ১৯২০ সালে নাগপুর নিখিল ভারত কংগ্রেস খেলাফত সম্মেলনে প্রতিনিধি হিসাবে যোগদান করেন ১৯২১ সালে যোগী ডহর সম্মেলনে বিশেষ ভূমিকা ছিল সুলেখক ও বক্তা ছিলেন এবং বিভিন্ন ভাষার উপর দখল ছিল।
মৃত্যু: ১৯৬১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে৷
বিচারপতি
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা
বাংলাদেশের সাবেক মাননীয় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা ১৯৫১ সালের ১ ফেব্রুয়ারী মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাধীন তীলকপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি স্বর্গীয় ললিত মোহন সিন্হা এবং ধনবতী সিন্হা এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করে ১৯৭৪ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বিচারপতি সিন্হা ২৪ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে এবং ১৬ জুলাই ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১২ জুন ২০১১ সালে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে এবং ১৭ জানুয়ারী ২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ১১ নভেম্বর ২০১৭ পদত্যাগ করেন।
বিচারপতি গীতেশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য
জন্ম: ১৯৩৮ সালে রাজনগর উপজেলার হাঁসখলা গ্রামে৷
কর্ম: কোলকাতা থেকে বিএল উপাধি পান৷ কোলকাতা হাইকোর্টে বিচার পতির দায়িত্ব পালন করেন৷
বিচারপতি সিকন্দর আলী
জন্ম: বড়লেখা উপজেলার ইনাইনগর গ্রামে ১৯০৬ সালে৷
কর্ম: সিলেট জজ কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন৷ ১৯৩৪ সালে মুন্সেফ পদে ময়মনসিংহে যোগদেন৷ পরবর্তীতে ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন৷
মৃত্যুঃ ১৯৬৬ সালে৷
সাংবাদিক
গৌরী শংকর ভট্টাচার্য্য তর্কবাগীশ
পিতা: জগন্নাথ ভট্টাচার্য্য৷
জন্ম: ১৭৯৯ সালে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামে৷
কর্ম: সিলেট বিভাগের প্রথম সাংবাদিক৷ গুড়গুড়ে হুক্কায় আসক্তির জন্য তাঁকে গুড়গুড়ে ভট্টাচার্য্য বলে ডাকাহত৷ ১৫ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করেন বদ্বীপেযান এবং ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়ন করে তর্কবাগীশ উপাধি লাভ করেন৷ জ্ঞানান্বেষণ পত্রিকার মাধ্যমে ১৮৩১ সালে সাংবাদিকতা পেশায় আসেন৷ তিনি অল বেষ্ট নিউজ পেপার ইন কোলকাতা এর সম্পাদক ছিলেন৷ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সমূহ হল শিশুপাঠ নীতিকথা (১৮৩০), গীতার অনুবাদ প্রথম খন্ড (১৮৩৫), জ্ঞান প্রদীপ প্রথম খন্ড (১৮৪০) ইত্যাদি৷
মৃত্যু: ১৮৫৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী৷
মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক
আব্দুল মুন্তাকীম চৌধুরী
পিতা: তজম্মল আলী চৌধুরী
জন্ম: অজ্ঞাত৷ কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুরের অধিবাসী৷
কর্ম: ১৯৭০ সালে এম.এল.এ নির্বাচিত হন৷ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এই ব্যক্তিত্ব স্বাধীনতার পর জাপান ও জার্মানীতে রাষ্ট্রদুতের দায়িত্ব পালন করেন।
মৃত্যু: অজ্ঞাত৷
সমাজ সেবক ও শিক্ষাবিদ
দেওয়ান আব্দুল হামিদ চৌধুরী
জন্ম: ১৮৫০ সালে রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর গ্রামে৷
কর্ম: সমাজ সেবার জন্য খান বাহাদুর খেতাব পান৷ রাজনগর পোর্টিয়াম স্কুলের জন্য জমিদান করেন৷ আসামের এমএলএ ছিলেন৷
আলহাজ্জ কেরামত আলী
পিতা: শফাত আলী
জন্ম: ১৯০১ সালে ভানুগাছে৷
কর্ম: ১৯৪৬ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে এম.এল.এ পদে জয়লাভ করেন৷ ১৯৬৫ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন৷ মৌলভীবাজার কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্নে ৭৫,০০০ টাকা এবং শ্রীমঙ্গল কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্নে ২৫,০০০ টাকা দান করেন।
মৃত্যু: ১৯৬৯ সালের ০৩ জুন৷
আব্দুল খালিক চৌধুরী
জন্ম: ১৮৮৬ সালে কুলাউড়া উপজেলার বিজলী গ্রামে৷
কর্ম: সিলেট এমসি কলেজের প্রথম মুসলিম ছাত্র৷ ১৯২১-৩৬ পর্যন্ত আসাম প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন৷ মৌলভীবাজার লোকাল বোর্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন৷
মৃত্যু: ১৯৪৮৷
সৈয়দ কুদরত উল্লাহ
পিতা- সৈয়দ হূরমত উল্লাহ
জন্ম: মৌলভীবাজার জেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামে ১৭৫০ সালে৷
কর্ম: মৌলভীবাজার জেলার প্রতিষ্ঠাতা৷ ১৭৯৩ সালে মুন্সেফ নিয়োজিত হন৷ মৌলভীবাজারের পশ্চিম বাজার তাঁর প্রতিষ্ঠিত৷
মৃত্যু: সাল নিয়ে দ্বিমত রয়েছে৷
ড. সুরেন্দ্র নাথ ধর
জন্ম: ১৮৯০ সালে মৌলভীবাজার জেলার বাউরভাগ গ্রামে৷
কর্ম: তিনি সিলেট বিভাগের প্রথম ডিএসপি ও প্রথম বৈজ্ঞানিক৷ ১৯১৫ সালে আসাম সরকারের গবেষণা বৃত্তি লাভ করেন৷ ১৯২০ সালে মাদ্রাজ কলেজে অধ্যাপনা নিয়ে গবেষণার কাজে নিয়োজিত হন৷
মৃত্যু: ১৯২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর৷
শ্রী শশাংক শেখর ঘোষ"
জন্ম: বাংলা ১৩২১ সালের ২২ আশ্বিন রাজনগর উপজেলার খলাগাঁও গ্রামে৷
কর্ম: চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন৷ দেশ বিভাগের পূর্বে রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন এবং সেক্রেটারী ছিলেন পশ্চিম বঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু৷ ১৯৪২ সালে ভারত ছাড় আন্দোলনের মাধ্যমে কংগ্রেসে যোগদেন ৷ কমিউনিষ্ট আন্দোলন ও বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা৷ সূর্য সেনের অন্যতম সহযোগী৷ তাঁর স্মরণে 'শশাংক শেখর ঘোষ স্মৃতি সংসদ, মৌলভীবাজার' নামীয় সমাজসেবামূলক একটি সংগঠন ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মৃত্যু: ১৯৮৯ সালের ৯ অক্টোবর৷
কমরেড তারা মিয়া
জন্ম: ১৯৩২ সালে রাজনগর উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে৷
লীলা দত্ত
জন্মঃ শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামে ১৯২৮ সালে৷
কর্মঃ ১৯৪২ সালে ভারত ছাড় আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন৷ ১৯৪৩ সালে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন৷ ভারতীয় সি.পি. এম দলের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন৷ কোলকাতা বেহালা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন৷
মৃত্যুঃ ১৯৮৫ সালের ৬ আগষ্ট৷
কারুশিল্পী
শ্রী জনার্দন
জন্ম: ১৫৭৫ সালে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামে৷
কর্ম: উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ কর্মকার৷ ১৬৩৭ সালে মুর্শিদাবাদের নবাবের জন্য জাহান কোষ নামে একটি তোপ তৈরি করেন৷ সপ্তদশ শতকে বিবি মরিয়ম ও কালে জমজম নামে দুটি কামান ঢাকা গিয়ে তৈরি করেন৷ বর্তমানে ওসমানী উদ্যানের সামনে ঐতিহাসিক কামান কালে জমজম শোভা পাচ্ছে৷
মৃত্যু: ১৬৪৫ সালে৷
উদ্যোক্তা
শ্রী সারদাচরন শ্যাম
পিতা- গৌরীকৃষ্ণ শ্যাম চৌধুরী।
জন্ম: রাজনগর উপজেলার উত্তর ভাগ গ্রামে ১৮৬২ সালের ২৫ মার্চ৷
কর্ম: সিলেট বিভাগের চা-শিল্পের কর্ণধার৷ চাকর ও প্রথিতযশা আইনজীবি হিসাবে পরিচিত ছিলেন৷ পর্বতপুর ও উত্তরভাগ চা-বাগানের প্রতিষ্ঠাতা৷
মৃত্যু: ১৯১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর৷
ধর্মপ্রচারক
হজরত শাহ মোস্তফা(রঃ)
জম্মঃ অজ্ঞাত৷
কর্মঃ হজরত শাহ জালাল(রঃ) এর অন্যতম সহযোগী৷ ৭০০ জন সহযোগী নিয়ে ধর্ম প্রচারের জন্য এদেশে আসেন৷ এখানেই বিয়ে করেন এবং বংশ বিস্তার করেন৷ ঘোড় সওয়ার চাবুক মার নামে পরিচিত৷ তাঁর নামে রাস্তার নামকরন করা হয়েছে৷
মৃত্যু: অজ্ঞাত৷ মৌলভীবাজার শহরে তাঁর মাজার রয়েছে৷
তথ্য সুত্র :
১) মৌলভীবাজার জেলা ইতিহাস-মো: মুমিনুল হক
২) মৌলভীবাজার জেলা ইতিহাস ও ঐতিহ্য -রব্বানী চৌধুরী
৩) শিলহটের ইতিহাস-মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন
৪) শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (পূর্বাংশ)-অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস